মেকাট্রনিক্স সিস্টেম বা CNC মেশিনে সেন্সর বলতে কি বোঝায়?
একটি মেকাট্রনিক্স সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত সমস্ত
ধরনের ডিভাইসের বর্তমান অবস্থা বা ‘State’ এর সম্পুর্ন ইনফর্মেশান যে ডিভাইসগুলির সাহায্যে কন্ট্রোলারে উপলব্ধ করা
হয়, সাধারনত সেগুলিকে সেন্সর বলা হয়। অর্থাৎ সেন্সরের সাহায্যে কন্ট্রোলার, মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে বা CNC মেশিনে ব্যাবহৃত
ডিভাইসগুলির বিভিন্ন অবস্থা প্রাপ্ত করে থাকে। বিভিন্ন সেন্সর থেকে প্রাপ্ত সিগন্যাল বা ইনফর্মেশান
কখনো কন্ট্রোলারে সরাসরি পাঠানো হয়, আবার কখনো ওই সিগন্যালকে আলাদা কনভার্টারের
মধ্য দিয়ে নেওয়া হয়, যাতে কিনা তা কন্ট্রোলারের বোধগম্য হয়। একটি মেকাট্রনিক্স সিস্টেমের সাথে যুক্ত
বিভিন্ন ডিভাইসগুলির আলাদা আলাদা অবস্থা বা state জানার জন্য প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন ধরনের সেন্সরের ব্যাবহার
করা হয়, উদাহরণস্বরূপ পজিশান সেন্সর, ভেলোসিটি সেন্সর, টেম্পারেচার
সেন্সর ইত্যাদি। বিভিন্ন ধরনের মেকাট্রনিক্স সিস্টেমের ক্ষেত্রে, ব্যাবহৃত
ডিভাইসগুলির যে যে অবস্থা বা state জানার
প্রয়োজন হয়, সেগুলি হল নিম্নরূপ।
- কারেন্ট সেন্সিং
- মোশান, পজিশান সেন্সিং
- ভেলোসিটি, অ্যাক্সেলারেশান
সেন্সিং
- ফ্লো এবং লেভেল সেন্সিং
- টেম্পারেচার সেন্সিং
- অপ্টিক্যাল বা লাইট সেন্সিং
- প্রেশার এবং স্টেইন সেন্সিং
- সাউন্ড এবং ভাইব্রেশান সেন্সিং
- ম্যাগনেটিক ফিল্ড সেন্সিং
যে কোন ধরনের সেন্সরকেই দুটি গ্রুপে ভাগ করা যায়, ‘কন্টাক্ট সেন্সর’ এবং ‘নন-কন্টাক্ট সেন্সর’। কন্টাক্ট সেন্সরের ক্ষেত্রে মেজারিং ডিভাইস এবং সেন্সরের মধ্যে অবশ্যই ফিজিক্যাল কন্টাক্টের প্রয়োজন হয়, কিন্তু নন-কন্টাক্ট সেন্সরের ক্ষেত্রে ডিভাইস এবং সেন্সরের মধ্যে কোন ফিজিক্যাল কন্টাক্টের প্রয়োজন হয় না, তাই এই ধরনের সেন্সরকে ‘প্রক্সিমিটি সেন্সরও’ বলা হয়ে থাকে। সেন্সর থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের ধরন বা signal type এর ওপর নির্ভর করেও সেন্সরগুলিকে দুটি আলাদা গ্রুপে ভাগ করা যায়, ‘ডিজিটাল সেন্সর’ গ্রুপ এবং ‘অ্যানালগ সেন্সর’ গ্রুপ। ডিজিটাল সেন্সর সাধারনত মেজারিং ডিভাইসের দুটি অবস্থা presence অথবা absence, সেন্স করে থাকে এবং সেক্ষেত্রে ওই ডিভাইসের ‘status’ জানার জন্য ডিজিটাল সিগন্যাল ‘1’ অথবা ‘0’ নেওয়া হয়। অ্যানালগ সেন্সর ব্যাবহার করা হয় সাধারনত কোন ডিভাইসের ‘কন্টিনিউয়াস ভেরিয়েবল’ যেমন টেম্পারেচার, প্রেশার, অ্যাক্সেলারেশান ইত্যাদি ইনফর্মেশান নেওয়ার জন্য এবং সেক্ষেত্রে ওই ডিভাইসের অবস্থার ওপর নির্ভর করে লিনিয়ার অ্যানালগ ভোল্টেজ অথবা কারেন্টকে সেন্সরের সিগন্যাল হিসাবে নেওয়া হয়। সাধারনত অ্যানালগ সেন্সর থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালকে সরাসরি মেকাট্রনিক্স সিস্টেমের কন্ট্রোলারে ব্যাবহার করা হয় না, সেক্ষেত্রে আলাদা একটি কনভার্টার ইউনিট ব্যাবহার করা হয়, যাতে ওই সিগন্যাল কন্ট্রোলারের বোধগম্য হয়। আবার কিছু ক্ষেত্রে ‘কন্টিনিউয়াস মেজারিং ডিভাইস’ ব্যাবহার করা হয়, কোন ডিভাইসের বর্তমান অবস্থা নিরবিচ্ছিন্নভাবে মেজারমেন্টের জন্য এবং সেক্ষেত্রে সিগন্যাল হিসাবে সাধারনত ডিজিটাল পালসের সাহায্য নেওয়া হয়, যেমন রোটারি এনকোডার, লিনিয়ার স্কেল ইত্যাদির ক্ষেত্রে কন্টিনিউয়াস ডিজিটাল পালস নেওয়া হয়। মডার্ন মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে MEMS অর্থাৎ Micro-Electro-Mechanical System ডিভাইস নামক এক ধরনের খুব ছোট স্পেশাল টাইপের সেন্সর ব্যাবহার করা হয়, যা কিনা কোন ডিভাইসের বিশেষ কিছু অবস্থার সিগন্যাল কন্ট্রোলারে পাঠিয়ে থাকে। বিভিন্ন মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে যে সমস্ত সেন্সরগুলি বহুল ব্যাবহৃত হয়, তার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা নিচে দেওয়া হল।
ডিজিটালকন্টাক্ট সেন্সর |
ডিজিটালনন-কন্টাক্ট সেন্সর |
অ্যানালগ সেন্সর |
অ্যাডভান্সড সেন্সর |
কন্টিনিউয়াস মেজারিং |
লিমিট সুইচ |
প্রক্সিমিটি
সেন্সর |
টেম্পারেচার
সেন্সর |
MEMS সেন্সর |
এনকোডার |
লিমিট সুইচ
লিমিট সুইচ একটি খুবই সরল কন্টাক্ট টাইপ
ডিজিটাল সেন্সর এবং এটি সাধারনত মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে ব্যাবহার করা হয় কোন মুভিং ডিভাইসের নির্দিষ্ট অবস্থানের
সিগন্যাল কন্ট্রোলারে পাঠানোর জন্য। একটি মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে বিভিন্ন মুভিং ডিভাইসের অবস্থানের সিগন্যাল নেওয়ার জন্য
বিভিন্ন ধরনের লিমিট সুইচ ব্যাবহার করা হয়। আবার একই
ধরনের লিমিট সুইচ মেকাট্রনিক্স ডিভাইসের বিভিন্ন স্থানে আলাদা আলাদা উদ্দেশ্যেও ব্যাবহৃত হয়। লিমিট সুইচ থেকে NC এবং NO দুই ধরনের
আউটপুটই নেওয়া হয়। নিচে একটি সাধারন লিমিট সুইচের ভিতরের অংশের ছবি দেওয়া
হল, এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের বা ডিজাইনের লিমিট সুইচ মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে দেখতে
পাওয়া যায়।
উপরের ছবি অনুযায়ী এই ধরনের লিমিট সুইচে একটি মেকানিক্যাল প্লাঞ্জার (mechanical plunger) থাকে, যা কিনা
একটি স্প্রিং টেনশানের বিপরিতে ওঠানামা করতে পারে। অর্থাৎ উপর থেকে চাপ দিলে প্লাঞ্জারটি নিচের দিকে নেমে আসে
এবং চাপ ছেড়ে দিলে প্লাঞ্জারটি পুনরায় নিজের অবস্থানে ফিরে যায়। প্লাঞ্জারটির সাথে একটি ‘স্ন্যাপ সুইচকে’ এমনভাবে লাগানো
থাকে যাতে কিনা সেটি প্লাঞ্জারটির ওঠানামার সাথে সাথেই অ্যাকটিভেট বা ডি-অ্যাকটিভেট হয়। লিমিট সুইচে ব্যাবহৃত স্ন্যাপ সুইচও একটি বিশেষ ধরনের হয়। স্ন্যাপ সুইচের ওপরেও একটি খুব
ছোট প্লাঞ্জার থাকে যাকে অল্প চাপ দিলেই সুইচের ভিতরের একটি স্প্রিং লোডিং
মেকানিজম ভিতরের একটি মুভেবল কন্টাক্টকে বিপরিত দিকের দুটি ফিক্সড কন্টাক্টের সাথে
নিজের অবস্থান বদল করে। অর্থাৎ স্ন্যাপ সুইচের মুভেবল
কন্টাক্ট স্বাভাবিক অবস্থায় একদিকের ফিক্সড কন্টাক্টের সাথে সংযোগ করে থাকে, এবং
যখন ঐ স্ন্যাপ সুইচের প্লাঞ্জারকে চাপ দেওয়া হয়, তখন সেই মুভেবল কন্টাক্ট বিপরিত
দিকের ফিক্সড কন্টাক্টের মধ্যে সংযোগ ঘটিয়ে থাকে। অর্থাৎ প্রথমের ফিক্সড কন্টাক্টকে সুইচের NC কন্টাক্ট হিসাবে
গন্য করা হয় এবং পরবর্তি ফিক্সড কন্টাক্টকে NO কন্টাক্ট হিসাবে নেওয়া হয়। নিচে লিমিট সুইচে ব্যাবহৃত একটি স্ন্যাপ সুইচের ভিতরের ছবি দেওয়া হল।
লিমিট সুইচে ব্যাবহৃত স্ন্যাপ সুইচের ভোল্টেজ এবং কারেন্ট ক্যারিং ক্যাপাসিটি ও প্লাঞ্জারের ধরনের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের হয়। মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে ব্যাবহৃত লিমিট সুইচের ভিতরে সাধারনত 250 V, 5 Amp. ক্যাপাসিটির মাইক্রো স্ন্যাপ সুইচ ব্যাবহার করা হয়। এছাড়াও মেশিনের বা সিস্টেমের প্রয়োজন অনুযায়ী লিমিট সুইচের প্লাঞ্জারও রোলার টাইপ, পিন টাইপ ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।
ইন্ডাক্টিভ প্রক্সিমিটি সেন্সর
এটি একটি নন-কন্টাক্ট টাইপ ডিজিটাল সেন্সর এবং মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে এই ধরনের (ইন্ডাক্টিভ টাইপ) প্রক্সিমিটি সুইচ বা সেন্সরই সবথেকে বেশী ব্যাবহৃত হয়। ইন্ডাক্টিভ প্রক্সিমিটি সুইচও গঠন ও কাজের ধরন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে, যেমন NPN বা PNP টাইপ, প্লাগ টাইপ বা কর্ড টাইপ ইত্যাদি। তবে সব ধরনের ইন্ডাক্টিভ প্রক্সিমিটি সুইচেরই বেসিক অপারেটিং প্রিন্সিপাল (Basic operating principle) একই হয়। নিচে একটি ইন্ডাক্টিভ প্রক্সিমিটি সুইচের ভিতরের অংশের ছবি দেখানো হয়েছে।
উপরের বাঁদিকের ছবিতে একটি
ইন্ডাক্টিভ প্রক্সিমিটি সুইচ কিভাবে কাজ করে তা ব্লক
ডায়াগ্রামের সাহায্যে বোঝানো হয়েছে। একটি ইন্ডাক্টিভ
প্রক্সিমিটি সুইচের প্রধানত চারটি অংশ রয়েছে, এগুলি হল কয়েল (Coil), অসিলেটর (Oscillator), ট্রিগার সার্কিট (Trigger Circuit) এবং আউটপুট সুইচিং সার্কিট (Output Switching Circuit)। একটি
কয়েলকে সাধারনত প্রক্সিমিটি সুইচের একদম সামনের দিকে অর্থাৎ
সেন্সিং ফেসের ঠিক নিচেই জড়ানো থাকে। অসিলেটর সার্কিটের
আউটপুটকে এই কয়েলে পাঠানো হয়, ফলে ঐ কয়েলটি নিজের সামনের দিকে একটি অল্টারনেটিং
ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি করে, যাকে সেন্সিং ফিল্ডও বলা হয়।
ঐ ম্যাগনেটিক ফিল্ড প্রক্সিমিটি
সুইচের সামনের একটি নন-মেটালিক আস্তরণের ভিতর দিয়ে বাইরে
ছড়িয়ে পড়ে। এখন কোন মেটালিক অবজেক্ট যেমন আয়রন, কপার,
অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল ইত্যাদি যদি ঐ অল্টারনেটিং ম্যাগনেটিক ফিল্ডের মধ্যে নিয়ে
আসা হয়, তবে ঐ মেটালিক অবজেক্টের মধ্যে দিয়ে একটি এডি কারেন্ট (eddy current) প্রবাহিত
হবে এবং এই এডি কারেন্ট অসিলেটর সার্কিটের ক্ষেত্রে তার পাওয়ার লস। তাই ঐ মেটালিক অবজেক্ট প্রক্সিমিটি সুইচের যত কাছে আসতে থাকবে, পাওয়ার লসও তত বাড়তে থাকবে ফলে অসিলেটরের আউটপুটের
উপরেও ক্রমাগত চাপ বাড়তে থাকবে এবং সাথে সাথে অসিলেটরের আউটপুটের অ্যামপ্লিচিউডও
কমতে থাকবে (ছবিতে দ্রষ্টব্য)। এইভাবে অসিলেটরের আউটপুটের
অ্যামপ্লিচিউড একটি নির্দিষ্ট মাত্রার নিচে নেমে গেলে (threshold level) এডি
কারেন্টের ফলে উৎপন্ন লোডিং অসিলেটর সার্কিটের অসিলেটিংকে সিজ বা বন্ধ করে দেয়। এবং যখন এই ঘটনা ঘটে তখন অসিলেটর সার্কিটের আউটপুটকে সেন্স করে একটি
ট্রিগার সার্কিট ঐ প্রক্সিমিটি সুইচের
আউটপুট সুইচিং সার্কিটকে অন করে দেয়।
একটি প্রক্সিমিটি
সুইচের সাধারনত তিনটি টার্মিনাল থাকে, +ve টার্মিনাল, –ve
টার্মিনাল এবং সুইচিং আউটপুট টার্মিনাল। কর্মপদ্ধতি অনুযায়ী প্রক্সিমিটি
সুইচ সাধারনত
ক্যাপাসিটিভ প্রক্সিমিটি সেন্সর
ইন্ডাক্টিভ প্রক্সিমিটি সেন্সরের মতই এটিও নন-কন্টাক্ট টাইপ ডিজিটাল সেন্সর এবং এটি সাধারনত নন মেটালিক অবজেক্ট এবং কিছু ক্ষেত্রে লিক্যুইড লেভেলকে সেন্স করার জন্যই ব্যাবহৃত হয়। ক্যাপাসিটিভ প্রক্সিমিটি সুইচও দুই ধরনের হয়ে থাকে, ডাইইলেক্ট্রিক টাইপ (dielectric type) এবং কন্ডাক্টিভ টাইপ (conductive type)। ক্যাপাসিটিভ প্রক্সিমিটি সুইচের ক্ষেত্রে সেন্সিং ফেসের সামনে দুটি প্লেটকে পাশাপাশি রাখা হয় এবং সেন্সিং অবজেক্ট ঐ প্লেট দুটির মধ্যে ডাই-ইলেক্ট্রিক (dielectric) হিসাবে কাজ করে। এখন কোন সেন্সিং অবজেক্ট ক্যাপাসিটিভ প্রক্সিমিটি সুইচের সেন্সিং ফেসের সামনে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে অর্থাৎ সেন্সিং ডিস্টেন্সের মধ্যে এলে, সুইচের মধ্যের ক্যাপাসিটরের মানও একটি নির্দিষ্ট ভ্যালুতে পৌছায়, যা কিনা সুইচের ভিতরের একটি ট্রিগার সার্কিটকে অন করে এবং এর ফলে সুইচিং আউটপুট পাওয়া যায়। ক্যাপাসিটিভ প্রক্সিমিটি সুইচ ইন্ডাক্টিভ প্রক্সিমিটি সুইচের তুলনায় বেশী দামী হওয়ায় বিশেষ কিছু ক্ষেত্র ছাড়া এর ব্যাবহার মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে খুবই কম।
আল্ট্রাসোনিক সেন্সর
আল্ট্রাসোনিক
সেন্সরের কর্মপদ্ধতি অনেকটা জাহাজে ব্যাবহৃত সোনার (sonar)
সিস্টেমের মত এবং এটি একটি নন-কন্টাক্ট টাইপ ডিজিটাল সেন্সর।
এখানে সাধারনত একই সেন্সরের মধ্যেই সেন্ডিং এবং রিসিভিং ট্রান্সডিউসার (sending and receiving
trnasducer) বসানো থাকে। সেন্ডিং ট্রান্সডিউসার থেকে একটি
আল্ট্রাসোনিক সাউন্ড পাঠানো হয়, যা কিনা সেন্সিং অবজেক্ট থেকে রিফ্লেক্ট হয়ে
রিসিভিং ট্রান্সডিউসারে ফিরে এলে সেন্সিং অবজেক্টের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া
যায়। মেটাল, কাঠ, কংক্রিট, রাবার, কাঁচ ইত্যাদি যে কোন
অবজেক্টকেই আল্ট্রাসোনিক সেন্সরের সাহায্যে ডিটেক্ট করা যায়। কিন্তু কাপড়, তুলো, উল
ইত্যাদি আল্ট্রাসোনিক সেন্সরের সাহায্যে ডিটেক্ট করা যায় না, কারন এগুলি আল্ট্রাসোনিক
ওয়েভকে শোষণ করে নেয়। অবজেক্ট কাউন্টিং, লিক্যুইডের লেভেল সেন্সিং, অটোমেটিক ডোর, রোবোটিক
সিস্টেম ইত্যাদি বিভিন্ন মেকাট্রনিক সিস্টেমে এই ধরনের সেন্সরের ব্যাবহার দেখা যায়। নিচে আল্ট্রাসনিক সেন্সরের একটি ছবি দেওয়া হল।
ইনফ্রারেড সেন্সর
ইনফ্রারেড সেন্সর একটি নন-কন্টাক্ট টাইপ ডিজিটাল সেন্সর এবং এটি সাধারনত অস্বচ্ছ
এবং নন মেটালিক বস্তুকে সেন্স করার জন্য বেশী ব্যাবহৃত হয়। কাজের ধরন অনুযায়ী ইনফ্রারেড সেন্সর সাধারনত তিন প্রকারের হয়, থ্রু বিম
টাইপ (thru-beam type), ডিফিউজ রিফ্লেক্টিভ টাইপ (diffuse reflective type) এবং
রেট্রো রিফ্লেক্টিভ টাইপ (retro reflective type)। মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে, লম্বা দূরত্ব থেকে কোন অস্বচ্ছ
বস্তুকে সেন্স করার জন্য সাধারনত এই ধরনের ইনফ্রারেড
সেন্সর ব্যাবহৃত হয়ে থাকে। নিচে উপরোক্ত তিন ধরনের ইনফ্রারেড
সেন্সর সম্মন্ধে আলোচনা করা হল।
ক) থ্রু বিম টাইপ ইনফ্রারেড সেন্সর - এই ধরনের ইনফ্রারেড সেন্সরে দুটি আলাদা ইউনিট, এমিটার (Emitter) এবং রিসিভার (Receiver) ব্যাবহার করা হয় (ছবিতে দ্রষ্টব্য) এবং এমিটার ও রিসিভারকে সেন্সিং অবজেক্টের দুই বিপরিত দিকে বসানো হয়। এমিটার থেকে একটি ইনফ্রারেড লাইট বিমকে লেন্সের মধ্যে দিয়ে সরাসরি বিপরিত দিকের রিসিভারের ওপর ফেলা হয়। এখন কোন অস্বচ্ছ বস্তু যদি ঐ ইনফ্রারেড লাইট বিমকে রিসিভারের ওপর পড়তে বাধা দেয়, তবে রিসিভার একটি সুইচিং সার্কিটকে অন করে, ফলে রিসিভার থেকে প্রয়োজনীয় সেন্সিং আউটপুট পাওয়া যায়। এই ধরনের সেন্সরের সবথেকে সুবিধা হল এর সাহায্যে অনেক দূরের বস্তুকেও সেন্স করা সম্ভব এবং এই ধরনের সেন্সর ব্যাবহারের প্রধান অসুবিধা হল এক্ষেত্রে দুটি আলাদা ডিভাইস অর্থাৎ এমিটার এবং রিসিভারের জন্য আলাদা ওয়ারিং করার প্রয়োজন হয়।
খ) ডিফিউজ রিফ্লেক্টিভ টাইপ ইনফ্রারেড সেন্সর - এই ধরনের ইনফ্রারেড সেন্সরে এমিটার এবং রিসিভার একটিমাত্র ইউনিটের মধ্যেই সংযুক্ত থাকে। এক্ষেত্রে এমিটার থেকে ইনফ্রারেড লাইট বিম লেন্সের মধ্যে দিয়ে অস্বচ্ছ বস্তুর ওপর পড়ে এবং রিফ্লেক্ট হয়ে আবার সেন্সরের রিসিভারে ফিরে আসে ও রিসিভার ঐ লাইটের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির ওপর নির্ভর করে সুইচিং সার্কিটকে অন বা অফ করে থাকে। থ্রু বিম টাইপ সেন্সরের তুলনায় এই ধরনের সেন্সরের ব্যাবহারের সুবিধা হল এখানে দুটি আলাদা ইউনিটের পরিবর্তে একটিমাত্র ইউনিট ব্যাবহার করা হয়, কিন্ত এই ধরনের সেন্সরের সেন্সিং ডিস্টেন্স থ্রু বিম টাইপ সেন্সরের তুলনায় কম হয় এবং সেন্সিং অবজেক্টের সারফেসও উজ্জল বা চকচকে হওয়ার প্রয়োজন হয়। নিচে ডিফিউজ রিফ্লেক্টিভ টাইপ ইনফ্রারেড সেন্সরের ছবি দেওয়া হল।
গ) রেট্রো রিফ্লেক্টিভ টাইপ ইনফ্রারেড সেন্সর - এই ধরনের ইনফ্রারেড সেন্সর বাকি দুই ধরনের সেন্সরের তুলনায় বেশী ব্যাবহৃত হয়। এখানে ডিফিউজ রিফ্লেক্টিভ টাইপ সেন্সরের মতই একটিমাত্র ডিভাইসের মধ্যেই এমিটার এবং রিসিভার দুইই বসানো থাকে। নিচে দেওয়া ছবির মত একটি রিফ্লেক্টরকে প্রক্সিমিটি সেন্সরের সাথেই ব্যাবহার করা হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় এমিটার থেকে নিঃসৃত ইনফ্রারেড লাইট বিম ঐ রিফ্লেক্টর থেকে সরাসরি রিফ্লেক্ট হয়ে পুনরায় আবার সেন্সরের রিসিভারে ফিরে আসে। কিন্ত যদি কোন অস্বচ্ছ বস্তু রিফ্লেক্টর এবং সেন্সরের মধ্যে চলে আসে, তখন লাইট বিম রিসিভারে ফিরে আসতে বাধা পায়, এবং সেন্সর সেই অনুযায়ী আউটপুট সুইচিং সার্কিটকে অন বা অফ করে। এই ধরনের সেন্সরের ব্যাবহার খুবই সুবিধাজনক কারন এখানে একটিমাত্র ডিভাইস ব্যাবহৃত হয়, ফলে ওয়্যারিং করা সুবিধাজনক এবং রিফ্লেক্টর ব্যাবহারের ফলে সেন্সিং ডিস্টেন্সও অনেক বেশী হয়। কিন্ত এই ধরনের সেন্সরের ব্যাবহারে একটিই অসুবিধা, তা হল সেন্সিং অবজেক্ট চকচকে বা রিফ্লেক্টিভ হলে সেখানে এই ধরনের সেন্সর ব্যাবহার করা যায় না।
প্রেশার সুইচ
প্রেশার সুইচ হল একটি ডিজিটাল এবং কন্টাক্ট টাইপ সেন্সিং ডিভাইস যার সাহায্যে কোন লাইনে সঠিক মাত্রার প্রেশার যেমন হাইড্রলিক বা নিউম্যাটিক প্রেশার রয়েছে কিনা তা বোঝা যায়। কোন একটি প্রেশার লাইনে পুর্বনির্ধারিত সঠিক মাত্রার প্রেশার থাকলে সেটি একটি ছোট স্ন্যাপ সুইচকে অন করে, এবং সেটিকে সেন্সিং ইনপুট হিসাবে নেওয়া হয়। এই প্রেশার সুইচের আউটপুট NC বা NO দুই ধরনেরই হতে পারে। প্রেশার সুইচে সাধারনত একটি ডায়াফ্রাম বা পিষ্টন থাকে যেটা কিনা সুইচের ইনপুট লাইনের ফ্লুইড প্রেশারের ফলে স্প্রিং টেনশানের এর বিপরিতে একটি স্ন্যাপ সুইচকে অন করে এবং যখন ফ্লুইড প্রেশার বন্ধ হয়, তখন ঐ স্প্রিং টেনশানের ফলে স্ন্যাপ সুইচটিও আবার পূর্বাবস্থায় ফিরে যায়। নিচে একটি হাইড্রোলিক প্রেশার সুইচ এবং তার ভিতরের বিভিন্ন অংশের ছবি দেওয়া হল। প্রেশার সুইচে সাধারনত একটি প্রেশার আডজাস্টমেন্ট স্ক্র থাকে, যার সাহায্যে ঐ প্রেশার সুইচটি কত ফ্লুইড প্রেশারে অ্যাকটিভেট হবে, তা নির্দিষ্ট করা হয়। অর্থাৎ ঐ অ্যাডজাস্টমেন্ট স্ক্রর সাহায্যে ভিতরের স্প্রিং টেনশানকে বাড়ানো বা কমানো হয় এবং ফলে স্ন্যাপ সুইচকে অন বা অফ করার জন্য বাইরে থেকে প্রদত্ত ফ্লুইড প্রেশারেরও কম বা বেশী করার প্রয়োজন হয়। প্রেশার সুইচ সাধারনত বিভিন্ন ডিজাইনের এবং সেন্সিং এলিমেন্টের হয়ে থাকে, যেমন হাইড্রোলিক প্রেশার সুইচ, নিউম্যাটিক প্রেশার সুইচ ইত্যাদি। এই প্রেশার সুইচের সাহায্যেই মেকাট্রনিক্স সিস্টেমের বিভিন্ন হাইড্রলিক এবং নিউম্যাটিক লাইনে সঠিক প্রেশার রয়েছে কি না তা বোঝা যায়। পরের পাতায় একটি হাইড্রোলিক প্রেসার সুইচের ভিতরের গঠন দেখানো হল।
ম্যাগনেটিক সেন্সর
ম্যাগনেটিক সেন্সর সাধারনত ম্যাগনেটের উপস্থিতিতেই অ্যাকচুয়েট করে এবং একে ম্যাগনেটিক রিড সুইচও বলা হয়। এটি একটি নন-কন্টাক্ট টাইপ ডিজিটাল সেন্সর। ম্যাগনেটিক সেন্সরে একটি ছোট কাঁচের গ্লাস বাল্বের মধ্যে দুটি খুব ছোট এবং পাতলা লোহার প্লেটকে খুব কাছাকাছি রাখা থাকে। যখন কোন পারমানেন্ট ম্যাগনেট ঐ গ্লাস বাল্বের কাছে নিয়ে আসা হয়, তখন ভিতরের প্লেটদুটি বেঁকে গিয়ে একে অন্যের সাথে সংযোগ ঘটিয়ে থাকে এবং তখন এটিকে ইলেক্ট্রিক্যাল কন্টাক্ট হিসাবে কাজ করানো হয়। আবার ঐ ম্যাগনেটকে যদি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন ঐ প্লেটদুটি পুনরায় পূর্বাবস্থায় ফিরে যায়, অর্থাৎ ইলেক্ট্রিক্যাল কন্টাক্ট বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই ম্যাগনেটিক সেন্সরও নরম্যালি ওপেন বা নরম্যালি ক্লোজ (NO বা NC) এই দুই ধরনের হতে পারে এবং এটি সাধারনত মেকাট্রনিক্স সিস্টেমের বিভিন্ন সেন্সরের ভিতরে ব্যাবহৃত হয়। নিচের ছবিতে একটি নরম্যালি ওপেন টাইপ ম্যাগনেটিক সেন্সর কিভাবে কাজ করে তা দেখানো হয়েছে।
লেভেল সেন্সর বা ফ্লোট সুইচ
লেভেল সেন্সর বা ফ্লোট সুইচ একটি কন্টাক্ট টাইপ ডিজিটাল সেন্সর এবং এর সাহায্যে কোন পাত্রে লিক্যুইডের লেভেল বা উচ্চতা সঠিক রয়েছে কিনা তা বোঝা যায়। প্রায় সব ধরনের ফ্লোট সুইচই বাউন্সি প্রিন্সিপালে(bouncy principle) কাজ করে থাকে। ফ্লোট সুইচে সাধারনত একটি ফ্লোট (Float) ব্যাবহার করা হয়, যা কিনা লিক্যুইডের সারফেসের উপর ভেসে থাকে এবং ঐ লিক্যুইডের সারফেসের লেভেল অনুযায়ী ফ্লোটটিও উপরে বা নিচে ওঠানামা করতে পারে। ঐ ফ্লোটের মধ্যেই একটি ছোট ম্যাগনেট থাকে যা কিনা একটি ম্যাগনেটিক রিড সুইচকে অন বা অফ করে থাকে। ম্যাগনেটিক রিড সুইচটিকে এমন অবস্থানে রাখা হয় যাতে ঐ ফ্লোটটি কেবলমাত্র একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে পৌঁছালেই ফ্লোটের মধ্যের ম্যাগনেট ঐ রিড সুইচটিকে অন বা অফ করতে পারে। ফলে লিক্যুইডের লেভেল একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে পৌঁছালেই কেবলমাত্র ফ্লোট সুইচের মধ্যের রিড সুইচটি অ্যাকটিভেট হয়। মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে এই রিড সুইচের আউটপুটকেই বিভিন্ন লিক্যুইডের যেমন কুল্যান্ট, হাইড্রোলিক অয়েল, লুব্রিকেশান অয়েল ইত্যাদির লেভেল বা লিক্যুইডটি সঠিক মাত্রায় আছে কিনা তা জানার জন্য ব্যাবহার করা হয়। নিচের চিত্রে একটি ফ্লোট সুইচ এবং তার ভিতরের অংশের ছবি দেওয়া হল।
ফ্লোট সুইচ
গঠন অনুযায়ী সাধারনত দুই ধরনের হয়, এগুলি হল ভার্টিক্যাল ফ্লোট সুইচ (Vertical Float Switch) এবং হরাইজন্টাল ফ্লোট
সুইচ (Horizontal
Float Switch)। ভার্টিক্যাল ফ্লোট সুইচ সাধারনত লিক্যুইড ট্যাঙ্কের উপরে বা নিচের প্লেটের সাথে বসানো
হয়, কিন্ত হরাইজন্টাল ফ্লোট সুইচকে ট্যাঙ্কের
পাশের দেওয়ালের সাথে বসানো থাকে। এই দুই ধরনের ফ্লোট সুইচেরই বেসিক ওয়ার্কিং প্রিন্সিপাল যদিও একই, কিন্ত গঠনের
দিক থেকে ভিন্ন রকমের হয়। উপরোক্ত দুই ধরনের ফ্লোট সুইচ ছাড়াও
লিক্যুইডের লেভেল পরিমাপ করার জন্য কিছু
কিছু ক্ষেত্রে আলাদা ধরনের লিক্যুইড লেভেল সেন্সরও ব্যাবহার
করা হয়ে থাকে, যেমন আল্ট্রাসোনিক লিক্যুইড
লেভেল সেন্সর, অপ্টিক্যাল লিক্যুইড লেভেল সেন্সর, হাইড্রোস্ট্যাটিক লিক্যুইড লেভেল সেন্সর ইত্যাদি, যদিও
এই ধরনের লিক্যুইড লেভেল সেন্সরের ব্যাবহার মেকাট্রনিক্স
সিস্টেমে খুবই কম।
ফ্লো সেন্সর
ফ্লো সেন্সর বা সুইচ একটি কন্টাক্ট টাইপ ডিজিটাল সেন্সর এবং কোন
পাইপ লাইনের মধ্যে লিক্যুইড ফ্লো হচ্ছে কিনা তা
বোঝার জন্য এটি ব্যাবহার করা হয়। ফ্লো সুইচ সাধারনত দুই ধরনের হয়,
পিস্টন টাইপ (Piston Type) এবং
শাটল টাইপ (shuttle Type)। নিচে একটি পিস্টন টাইপ ফ্লো
সুইচ কিভাবে কাজ করে থাকে তা দেখানো হয়েছে।
উপরের ছবি অনুযায়ী
ফ্লো সুইচে একটি পারমানেন্ট ম্যাগনেট ও একটি রিড সুইচ ব্যাবহার করা হয়। পিস্টন টাইপ ফ্লো সুইচের ক্ষেত্রে পারমানেন্ট ম্যাগনেট একটি
পিস্টনের সাথে সংযোগ করা থাকে এবং সেটি ফ্লুইড প্রেশারের ফলে একটি স্প্রিং
টেনশানের বিপরিতে মুভ করতে পারে,
ফলে যখন ফ্লুইড ইনলেট লাইনে ফ্লুইড
প্রেশার তৈরি হয় তখন ঐ পিস্টনের সাথে সাথে
পারমানেন্ট ম্যাগনেটটিও মুভ করে। একটি রিড সুইচকে ঠিক ঐ পিস্টনের উপরেই সুইচের বডির সাথে লাগানো থাকে (ছবিতে
দ্রষ্টব্য), ফলে ঐ পারমানেন্ট ম্যাগনেটের
মুভমেন্টের সাথে সাথে ঐ রিড সুইচও কখনো activate বা de-activate হয়। এই রিড সুইচের আউটপুট NC বা NO এই দুই ধরেনেরই হতে পারে, যা
কিনা মেকাট্রনিক্স সিস্টেমের ইনপুট হিসাবে নেওয়া হয়। শাটল টাইপ ফ্লো সুইচের কর্মপদ্ধতিও অনেকটা পিস্টন টাইপ ফ্লো
সুইচের মতই,
শুধুমাত্র
এখানে
পিস্টনের
বদলে
শাটল
ব্যাবহার
করা
হয়।
টেম্পারেচার সেন্সর
এটি একটি
অ্যানালগ টাইপ সেন্সর এবং মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে এই ধরনের সেন্সরের
ব্যাবহার প্রায়ই দেখা যায়। কোন অবজেক্টের টেম্পারেচার বা তাপমাত্রার পরিবর্তন পরিমাপ করার জন্য
সাধারনত এই ধরনের সেন্সরের ব্যাবহার হয়ে থাকে। রেফ্রিজারেটর, কম্পিউটার, মোটর কন্ট্রোল, প্রসেসিং
ইন্ডাস্ট্রি, অটোমোবাইল ইত্যাদি প্রায় সব ক্ষেত্রেই তাপমাত্রার পরিবর্তন পরিমাপ
করার জন্য এই ধরনের সেন্সর ব্যাবহার করা হয়। টেম্পারেচার সেন্সর
হিসাবে সাধারনত থারমিস্টর, থার্মোকাপল, এবং রেজিস্টিভ
টেম্পারেচার ডিভাইস বা RTD ব্যাবহার করা হয়। সাধারনত এই সকল
সেন্সরের রেজিস্ট্যান্স বা ভোল্টেজের মানের তারতম্য, টেম্পারেচার সেন্সরের আউটপুট
সিগন্যাল হিসাবে নেওয়া হয় এবং একটি উপযুক্ত সার্কিটের সাহায্যে সেন্সরের সিগন্যাল
আউটপুট নেওয়া হয়।
থার্মোকাপল - এই ধরনের সেন্সরে দুটি আলাদা প্রকারের মেটালের একদিক যুক্ত ও অপরদিক
খোলা রাখা হয়। যুক্ত প্রান্তকে ‘Hot Junction’ এবং খোলা প্রান্তকে ‘Cold Junction’ বলা হয়। যদি ‘Hot Junction’ প্রান্তকে উত্তপ্ত করা হয়, তবে ‘Cold Junction’ প্রান্তে খুব অল্প পরিমানে ভোল্টেজ পাওয়া যায় এবং এই ভোল্টেজের পরিমান
নির্ভর করে থার্মোকাপলের ওই ‘Hot Junction’ প্রান্তকে কতটা উত্তপ্ত করা হয়েছে তার ওপর। সেন্সিং সিগন্যালের জন্য এরপর ‘Cold
Junction’ প্রান্তে প্রাপ্ত ভোল্টেজকে সুবিধামত অ্যামপ্লিফায়ার
এবং কনভার্টারের মধ্য দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় যাতে তা কন্ট্রোলারের বোধগম্য হয়। নিচে ছবির সাহায্যে থার্মোকাপল ব্যাবস্থা বোঝানো হল।
রেজিস্টিভ
টেম্পারেচার ডিভাইস বা RTD - যে কোন মেটালিক অবজেক্টের ‘ইলেক্ট্রিক্যাল রেজিস্টিভিটি’ বা রেজিস্টেন্স ভ্যালু নির্ভর করে ওই অবজেক্টটি কতটা উত্তপ্ত তার ওপর। রেজিস্টিভ টেম্পারেচার ডিভাইস বা RTD সেন্সর এই বেসিক প্রিন্সিপালের ওপর কাজ করে থাকে। অর্থাৎ RTD তে একটি নির্দিষ্ট মানের মেটালিক তারকে (সাধারনত
প্লাটিনাম) রেজিস্ট্যান্স হিসাবে ব্যাবহার করা হয় এবং ওই রেজিস্ট্যান্সকে উত্তপ্ত
করা হলে তার রেজিস্টেন্স ভ্যালুও পরিবর্তিত হয়। এরপর ওই পরিবর্তিত রেজিস্টেন্স এবং উপযুক্ত সার্কিটের
সাহায্যে ওই RTD সেন্সরের
সিগন্যাল আউটপুট নেওয়া হয়। এই ধরনের টেম্পারেচার সেন্সর সাধারনত খুব সুক্ষ এবং বেশী তাপমাত্রা
পরিমাপের ক্ষেত্রে ব্যাবহার করা হয়। নিচে রেজিস্টিভ টেম্পারেচার ডিভাইস বা RTD কিভাবে কাজ করে তা দেখানো হল।
থার্মিস্টর - থার্মিস্টরের কর্মপদ্ধতি অনেকটা রেজিস্টিভ টেম্পারেচার ডিভাইস বা RTDর মতই। শুধুমাত্র এখানে মেটালিক রেজিস্ট্যান্সের পরিবর্তে পলিমার বা সেরামিক ব্যাবহার করা হয় এবং সেই কারনে থার্মিস্টরের দাম RTD র তুলনায় অনেক কম হয়। সাধারনত বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই নেগেটিভ টেম্পারেচার কোয়েফিসিয়েন্ট বা NTC থার্মিস্টর ব্যাবহার করা হয়, অর্থাৎ এক্ষেত্রে টেম্পারেচার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে থার্মিস্টরের রেজিস্ট্যান্সের মান হ্রাস পায়। এই ধরনের টেম্পারেচার সেন্সর কেবলমাত্র কম তাপমাত্রা পরিমাপের ক্ষেত্রেই ব্যাবহার করা যায়। নিচে একটি টেম্পারেচার সেন্সর IC এবং একটি NTC থার্মিস্টরের ছবি দেওয়া হল।
সাউন্ড সেন্সর
এটি একটি ডিজিটাল সেন্সর এবং এই ধরনের
সেন্সরকে কোন শব্দ বা অডিওর মাত্রা অর্থাৎ ইন্টেন্সিটি অফ সাউন্ড (Intensity of sound) নির্ধারন করার জন্য ব্যাবহার করা হয়। অর্থাৎ কোন শব্দের প্রাবল্য একটি নির্দিষ্ট মাত্রার (Threshold value) থেকে বেশী হলেই এই ধরনের সাউন্ড
সেন্সর থকে একটি সিগন্যাল ভোল্টেজ পাওয়া যায়। এখানে একটি ছোট মাইক্রোফোন ব্যাবহার করা হয়, যা কিনা
শব্দের প্রাবল্য অনুসারে ইলেক্ট্রিক্যাল সিগন্যাল প্রস্তুত করে এবং তা একটি
অ্যামপ্লিফায়ারে প্রেরন করে। এরপর ওই অ্যামপ্লিফায়ারের আউটপুট সিগন্যাল বিভিন্ন সার্কিটের মধ্য দিয়ে পাঠিয়ে
সাউন্ড সেন্সরের আউটপুটের জন্য প্রয়োজনীয় সিগন্যাল ভোল্টেজ প্রস্তুত করে। সেন্সর বোর্ডেই অবস্থিত একটি ‘পোটেনশিওমিটারের’ সাহায্যে কত সাউন্ড ইন্টেন্সিটিতে ওই সেন্সরটি কাজ করবে তা নির্ধারন করা
হয়। সিকিউরিটি, মনিটরিং, সুইচিং অ্যাপ্লিকেশান
ইত্যাদি বিভিন্ন যায়গায় এই ধরনের সাউন্ড সেন্সরের ব্যাবহার দেখা যায়। নিচে একটি সাউন্ড সেন্সরের ছবি দেওয়া হল।
লাইট সেন্সর
লাইট সেন্সর সাধারনত একটি অ্যানালগ টাইপ সেন্সর এবং এটি লাইটের Intensity বা তীব্রতা পরিমাপ করার জন্য ব্যাবহার করা হয়। এই ধরনের লাইট সেন্সরে সাধারনত সিলিকন ফোটো-ডায়োড (Silicon Photodiode) ব্যাবহার করা হয়, যা কিনা লাইটের তীব্রতা অনুপাতে অ্যানালগ ভোল্টেজ উৎপন্ন করে থাকে। আবার কিছু ক্ষেত্রে LDR অর্থাৎ লাইট ডিপেন্ডেন্ট রেজিস্টর ব্যাবহার করা হয়, যেখানে LDR এর রেজিস্ট্যান্সের মান, ওর ওপরে পড়া লাইটের ইন্টেন্সিটি বা তীব্রতার ওপর নির্ভর করে। যখন কোনপ্রকার লাইট ওই LDR এর ওপর পড়ে না তখন LDR এর রেজিস্ট্যান্সের মান সাধারনত মেগা-ওহমের কাছাকাছি থাকে এবং লাইটের তীব্রতা অনুসারে ওই রেজিস্ট্যান্সের মান কমতে থাকে। ফোটো-ডায়োড বা LDR এর আউটপুট কখনো কখনো মেকাট্রনিক্স সিস্টেমের প্রয়োজন অনুসারে কনভার্টার সার্কিটের মধ্য দিয়েও নেওয়া হয়। কিছু ক্ষেত্রে সুবিধার জন্য এই ধরনের লাইট সেন্সরের সাথে ফাইবার অপ্টিক প্রোব (Fiber Optic Probe) ব্যাবহার করা হয়। বর্তমানে মেশিনিং ইন্ডাস্ট্রি, কম্পিউটার, মেডিক্যাল ইত্যাদি বিভিন্ন যায়গায় লাইট সেন্সর ব্যাবহার করা হচ্ছে। নিচে একটি LDR এবং একটি লাইট সেন্সরের ছবি দেওয়া হল।
টিল্ট সেন্সর
এটি একটি ডিজিটাল সেন্সর এবং এই ধরনের
সেন্সরকে ব্যাবহার করা হয় কোন অবজেক্টের Orientation অথবা Inclination নির্ধারন করার জন্য। সাধারনত এই ধরনের সেন্সরে একটি ছোট কাঁচের ফাঁপা সিলিন্ডারের একদিকে দুটি কন্ডাক্টিভ এলিমেন্ট
নিজেদের মধ্যে কিছুটা দূরত্বে বসানো থাকে এবং একটি ‘রোলিং বল’ অথবা ‘মার্কারি ব্লব’ ওই সিলিন্ডারের মধ্যে এমনভাবে রাখা হয় যাতে সেটি সহজেই
ওই সিলিন্ডারের মধ্যে চলাচল করতে পারে। যখন সেন্সরটি ‘ওরিয়েন্টেড’ অর্থাৎ কন্ডাক্টিভ এলিমেন্ট দুটি নিচের দিকে রয়েছে, সেই
অবস্থায় ওই রোলিং বল বা মার্কারি ব্লব কন্ডাক্টিভ এলিমেন্ট দুটির মধ্যে সংযোগ
স্থাপন করে এবং সেটি একটি সুইচের কাজ করে এবং এটি সেন্সিং আউটপুট বা সিগন্যাল
হিসাবে নেওয়া হয়। আবার যখন সেন্সরটি ‘ইনক্লাইন্ড’ অবস্থায় থাকে, তখন রোলিং বল বা মার্কারি ব্লব কন্ডাক্টিভ
এলিমেন্ট দুটি থেকে দূরে সরে যায় এবং নিজেদের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই ধরনের সেন্সর সাধারনত খেলনা, বিভিন্ন প্রকারের
গ্যাজেট ইত্যাদিতে দেখা যায়। নিচে একটি টিল্ট সেন্সর এবং তার ভিতরের অংশ
দেখানো হল।
টাচ সেন্সর
মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে বিভিন্ন ধরনের অপারেটিং প্যানেল, কন্ট্রোল প্যানেল
ইত্যাদিতে টাচ সেন্সরের ব্যাবহার প্রায়ই দেখা যায়। টাচ সেন্সর প্রধানত দুই প্রকারের হয়ে থাকে, রেজিস্টিভ
এবং ক্যাপাসিটিভ টাচ সেন্সর। তবে এইদুটির মধ্যে ক্যাপাসিটিভ টাইপ টাচ সেন্সরের ব্যাবহার তুলনামুলক বেশী
দেখা যায়। রেজিস্টিভ টাচ সেন্সরে সাধারনত দুটি
আলাদা কন্ডাক্টিভ লেয়ার, ইন্ডিয়াম টিন অক্সাইডের (Indium
Tin Oxide) পাতলা স্তর দিয়ে তৈরি করা হয় ও ‘স্পেসারের’ সাহায্যে এদের মধ্যে খুব সামান্য পরিমান ফাঁক তৈরি করা হয় এবং সবার ওপরে
একটি ফ্লেক্সিবল ফয়েলের ফিল্ম ডিপোজিট করা হয়। এরপর খুব সামান্য পরিমানের ভোল্টেজ ওই কন্ডাক্টরের মধ্য দিয়ে পাঠানো হয়। যখন আঙ্গুল বা স্টাইলাসের সাহায্যে উপরের ফিল্মের ওপর
চাপ দেওয়া হয়, তখন উপরের কন্ডাক্টর নিচের কন্ডাক্টরের সাথে স্পর্শ করে এবং ফলস্বরূপ
কন্ডাক্টিভ লেয়ারে একটি ভোল্টেজ ড্রপ তৈরি হয়, যা কিনা সেন্সরের আউটপুট সিগন্যাল
হিসাবে নেওয়া হয়। নিচে রেজিস্টিভ টাচ সেন্সরের
কর্মপদ্ধতি বোঝানো হল।
ক্যাপাসিটিভ টাচ সেন্সরের ক্ষেত্রে, সেন্সিং প্লেট তৈরির জন্য একটি
কন্ডাক্টিভ কোটিং মেটেরিয়ালের ওপর পাতলা ইনসুলেটিং কভার দেওয়া থাকে এবং ওই
কন্ডাক্টিভ কোটিং প্লেটটিকে ক্যাপাসিটরের একটি ইলেকট্রোড হিসাবে ধরা হয়। ক্যাপাসিটরের অপর ইলেকট্রোড হিসাবে পারিপার্শ্বিক অবস্থা
বা Environment এবং মানুষের আঙ্গুলকে (Human finger) গন্য করা হয়। সাধারনত খুব
সামান্য পরিমানের ভোল্টেজ ওই কন্ডাক্টিভ প্লেটের সাথে দেওয়া থাকে এবং স্বাভাবিক
অবস্থায় কন্ডাক্টিভ প্লেট, ইন্সুলেটিং কভার এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা এই তিনে মিলে একটি Parasitic
Capacitor, ‘Co’ তৈরি করে (ছবিতে
দ্রষ্টব্য)। যখন মানুষের আঙ্গুল প্লেটের উপরের
সারফেস স্পর্শ করে, তখন ওই কন্ডাক্টিভ প্লেট, ইন্সুলেটিং কভার এবং মানুষের আঙ্গুল
মিলে Capacitor, ‘Cr’ তৈরি হয়। এর ফলে ওই সার্কিটে একটি ‘ক্যাপাসিটেন্স ডিফারেন্স’ উৎপন্ন হয়, যা কিনা ক্যাপাসিটিভ টাচ সেন্সরের সেন্সিং আউটপুট হিসাবে নেওয়া
হয়। নিচে ছবির সাহায্যে ক্যাপাসিটিভ টাচ
সেন্সরের কর্মপদ্ধতি বোঝানো হল
হিউমিডিটি সেন্সর
সাধারনত বাতাসে
বা কোন গ্যাসের মধ্যে জলীয় বাস্প বা Moisture এর উপস্থিতির পরিমাপ করার জন্যই হিউমিডিটি সেন্সরের ব্যাবহার হয়। কোন ইলেক্ট্রনিক্স এবং ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক কম্পোনেন্ট বা
হাই ভোল্টেজ ডিভাইসের অপারেটিং ফিল্ড নির্বাচনের ক্ষেত্রেও এই ধরনের হিউমিডিটি
সেন্সর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন প্রকারের
হিউমিডিটি সেন্সর ব্যাবহার হয়, তবে এদের মধ্যে ক্যাপাসিটিভ হিউমিডিটি সেন্সরের
ব্যাবহার সবথেকে বেশী দেখা যায়। ক্যাপাসিটিভ হিউমিডিটি সেন্সরে দুটি ইলেক্ট্রোডের
মধ্যে ডাই-ইলেকট্রিক মেটেরিয়াল হিসাবে সাধারনত ‘Hygroscopic
dielectric material’ ব্যাবহার করা হয়। এই ধরনের সেন্সরে প্রধানত প্লাস্টিক বা পলিমার ডাই-ইলেকট্রিক
মেটেরিয়াল হিসাবে দেখা যায় এবং স্বাভাবিক অবস্থায় এদের ডাই-ইলেকট্রিক কন্সট্যান্ট
সাধারনত ২ থেকে ১৫ এর মধ্যে থাকে। আবার স্বাভাবিক তাপমাত্রায় জলীয় বাস্পের ডাই-ইলেকট্রিক কন্সট্যান্ট সাধারনত ৮০ থাকে, যা কিনা প্লাস্টিক বা পলিমারের ডাই-ইলেকট্রিক
কন্সট্যান্ট থেকে অনেক বেশী। সুতরাং স্বভাবতই সেন্সরের ডাই-ইলেকট্রিক মেটেরিয়াল বাতাসের জলীয়
বাস্প শোষণ (absorb) করে এবং
ক্যাপাসিটেন্সের মান বৃদ্ধি করে। এই ক্যাপাসিটেন্সের মান পরিমাপ করেই বাতাসে জলীয় বাস্প অর্থাৎ
হিউমিডিটির সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। নিচে একটি হিউমিডিটি সেন্সরের ছবি দেওয়া হল।
প্রেশার অথবা স্ট্রেইন সেন্সর
আমরা জানি যখন
কোন স্থির বস্তুর ওপর বাইরে থেকে বল প্রযুক্ত হয়, তখন স্ট্রেস এবং স্ট্রেইন এই
দুটি বিষয় বস্তুটির ওপর কাজ করে থাকে। স্ট্রেস বলতে বোঝায় বস্তুটির আভ্যন্তরীণ বা ইন্টার্নাল রেজিস্টেন্স ফোর্স
এবং স্ট্রেইন বলতে বোঝায় বস্তুটির ডিসপ্লেসমেন্ট অথবা ডিফর্মেশান। প্রদত্ত বলের মান অনুসারে স্ট্রেইন সেন্সর বা স্ট্রেইন গেজের
ডিফর্মেশানকে কাজে লাগিয়ে কোন বস্তুর ওপর প্রদত্ত প্রেশারের পরিমাপ করা হয়। প্রদত্ত বল বা ফোর্সের মান অনুসারে স্ট্রেইন গেজের
রেজিস্টেন্সের মান পরিবর্তিত হয়ে থাকে, যা পরিমাপ করেই সাধারনত প্রদত্ত প্রেশারের
পরিমাপ করা হয়। মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে এই ধরনের স্ট্রেইন
গেজের সাহায্যে সাধারনত কোন ডিভাইসের ওপর প্রদত্ত ফোর্স, প্রেশার, টেনশান, ওয়েট
ইত্যাদির পরিমাপ করার কাজে ব্যাবহার করা হয় এবং সিস্টেমের প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন
টাইপের ও ডিজাইনের স্ট্রেইন গেজের ব্যাবহার দেখা যায়। নিচে একটি স্ট্রেইন গেজের ছবি দেওয়া হল।
সাধারনত কোন ধাতব
ওয়্যার বা তারের রেজিস্টেন্সের মান বা ভ্যালু তার লেংথ এবং ক্রস-সেকশানের ওপর
নির্ভর করে। স্ট্রেইন গেজে একটি লম্বা তারকে
ফ্লেক্সিবল বোর্ডের ওপর ‘Zig-Zag’ ওয়েতে বসানো
থাকে। যখন বোর্ডের ওপর চাপ বা প্রেশার দেওয়া
হয়, তখন ওই তারের কার্যকরী লেংথ এবং ক্রস-সেকশানের (Overall
length & cross section) পরিবর্তন হয় এবং ফলস্বরূপ ওই তারের
রেজিস্টেন্সের মানেরও পরিবর্তন হয়ে থাকে। এবং এই পরিবর্তিত রেজিস্টেন্সের মানের পরিমাপ করেই স্ট্রেইন গেজের ওপর প্রদত্ত
বলের পরিমাপ করা হয়। স্ট্রেইন গেজ
থেকে প্রাপ্ত পরিবর্তিত রেজিস্টেন্সের মান সাধরনত খুবই কম হয়ে থাকে, তাই কন্ট্রোলারের গ্রহণযোগ্য বা পরিমাপযোগ্য সিগন্যাল পাওয়ার জন্য স্ট্রেইন গেজের সাথেই একটি হুইটস্টন
ব্রিজ (Wheatstone Bridge) এবং অ্যামপ্লিফায়ার সার্কিট
ব্যাবহার করার প্রয়োজন হয়।
লিনিয়ার ভেরিয়েবল ডিফারেন্সিয়াল ট্রান্সফর্মার বা LVDT
লিনিয়ার ভেরিয়েবল
ডিফারেন্সিয়াল ট্রান্সফর্মার বা LVDT সাধারনত কোন অবজেক্টের খুব সামান্য পরিমান (এমনকি মাইক্রন লেভেল অবধি)
লিনিয়ার বা সরলরৈখিক মুভমেন্টের পরিমাপ করার জন্য ব্যাবহার করা হয় এবং এটি
মুভমেন্টের পরিমাপ অনুসারে ‘মিউচুয়াল ইন্ডাকশান প্রিন্সিপালে’ প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রিক্যাল সিগন্যাল উৎপন্ন করে। LVDT তে সাধারনত
একটি ‘কোর’ এবং তিনটি ‘কয়েল’ ব্যাবহার করা হয়, যেগুলি
ট্রান্সফর্মারের মত কাজ করে থাকে। এই ট্রান্সফর্মারের একটি প্রাইমারি এবং দুটি সেকেন্ডারি কয়েল থাকে এবং এই
প্রাইমারি কয়েল সাধারনত সেকেন্ডারি কয়েল দুটির ঠিক মাঝখানে বসানো থাকে (ছবিতে
দ্রষ্টব্য)। কোর সাধারনত ম্যাগনেটিক মেটেরিয়ালের
তৈরি হয়, যা কিনা চোঙাকার ভাবে জড়ানো কয়েলগুলির মধ্য দিয়ে সহজেই চলাচল করতে পারে। একটি সরু নন-ম্যাগনেটিক মেটেরিয়ালের দন্ড ওই কোরের সাথে
সংযোগ করা থাকে এবং দন্ডের অপর প্রান্ত যে ডিভাইসের মুভমেন্ট পরিমাপ করতে হবে, তার
সাথে যুক্ত থাকে।
যখন ট্রান্সফর্মারের প্রাইমারি ওয়ান্ডিংয়ে ভোল্টেজ সাপ্লাই করা হয়, ফলস্বরূপ ‘Resulting Flux’ কোরের মধ্য দিয়ে ট্রান্সফর্মারের সেকেন্ডারি ওয়ান্ডিংয়ে পৌঁছায় এবং সেকেন্ডারি কয়েলে ‘Induced Voltage’ উৎপন্ন হয়। কোরের মুভমেন্টের সাথে সাথে সেকেন্ডারি কয়েলে ইন্ডিউসড ভোল্টেজের তারতম্য ঘটে এবং এই ইন্ডিউসড ভোল্টেজ পরিমাপ করেই কোরের বা তার সাথে যুক্ত ডিভাইসের মুভমেন্ট বা ডিসপ্লেসমেন্টের পরিমাপ পাওয়া যায়। এছাড়াও ইন্ডিউসড ভোল্টেজের ‘ফেজ’ কোরের মুভমেন্টের ডাইরেকশান বা দিক নির্ধারন করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে, খুব সূক্ষ্ম লিনিয়ার মেজারমেন্টের জন্য এই ধরনের LVDT এর ব্যাবহার প্রায়ই দেখা যায়।
হল সেন্সর
হল সেন্সর
সাধারনত কোন ম্যাগনেটিক ফিল্ডের উপস্থিতিতে হল এফেক্ট (Hall
Effect) প্রিন্সিপালে কাজ করে থাকে। আমরা জানি ‘হল এফেক্ট প্রিন্সিপাল’ অনুসারে যখন কোন ম্যাগনেটিক ফিল্ডকে কোন কারেন্ট প্রবাহিত তারের কাছাকাছি
নিয়ে আসা হয় (ইলেক্ট্রিক ফিল্ডের সাথে উলম্বভাবে), তখন ওই তারের মধ্যে একটি
পোটেনশিয়াল ডিফারেন্স উৎপন্ন হয়। এই প্রিন্সিপালকে কাজে লাগিয়েই, হল সেন্সরের সাহায্যে ম্যাগনেটিক ফিল্ডের
উপস্থিতি হিসাবে সেন্সর থেকে ভোল্টেজ আউটপুট নেওয়া হয়। যদিও এই ধরনের সেন্সর কেবলমাত্র যে কোন এক দিকের
ম্যাগনেটিক পোলকেই সেন্স করতে সক্ষম। নিচে বাঁদিকের ছবিতে ‘হল এফেক্ট প্রিন্সিপাল’ বোঝানো হয়েছে এবং ডানদিকে একটি হল সেন্সর মডিউলের ছবি দেওয়া হয়েছে।
ফ্লেক্স সেন্সর
ফ্লেক্স
সেন্সরের সাহায্যে সাধারনত কোন ডিভাইস সরলরৈখিক অবস্থানে রয়েছে কিনা বা তার
বক্রতার পরিমাপ করা হয়ে থাকে, অর্থাৎ এই ধরনের সেন্সরের সাহায্যে কোন ডিভাইসের বিচ্যুতি পরিমাপ করা সম্ভব। ফ্লেক্স সেন্সর সাধারনত খুবই পাতলা এবং নমনীয় বা ফ্লেক্সিবল
হয় এবং এর রেজিস্ট্যান্সের মান তার বক্রতার ওপর নির্ভর করে। অর্থাৎ স্বাভাবিক অবস্থায় এই সেন্সরের যা রেজিস্ট্যান্স
ভ্যালু থাকে, সেন্সরটিকে বাঁকালে বা এটির আকারের পরিবর্তন করা হলে তার
রেজিস্ট্যান্সের মান পরিবর্তিত হয়। যে কোন মেকাট্রনিক্স কন্ট্রোলার যেহেতু কেবলমাত্র ভোল্টেজের তারতম্যকেই
ফিডব্যাক হিসাবে পরিমাপ করতে সক্ষম, তাই এই পরিবর্তিত রেজিস্ট্যান্স ভ্যালুকে কাজে
লাগিয়ে সেন্সরের সাথে যুক্ত একটি ভোল্টেজ ড্রাইভার সার্কিটের সাহায্যে প্রয়োজনীয়
ভোল্টেজ উৎপন্ন করা হয়। রোবোটিক আর্মের ফিংগার মুভমেন্টের সাথে এই ধরনের সেন্সরের ব্যাবহার দেখা যায়। নিচে একটি সরল ফ্লেক্স সেন্সরের ছবি দেওয়া হল।
পোটেনশিওমিটার
কিছু ক্ষেত্রে
পোটেনশিওমিটারকে কোন ডিভাইসের পজিশান সেন্স করার কাজে ব্যাবহার করা হয়। পোটেনশিওমিটার লিনিয়ার এবং রোটারি এই দুই ধরনেরই হতে
পারে। আমারা জানি রোটারি পোটেনশিওমিটারের ক্ষেত্রে
শ্যাফটের ঘুর্ননের সাথে সাথে অথবা লিনিয়ার পোটেনশিওমিটারের স্লাইডারের মুভমেন্টের সাথে
সাথে রেজালটেন্ট রেজিস্ট্যান্সের মানের পরিবর্তন হতে থাকে। এই পরিবর্তিত রেজিস্ট্যান্সের মান থেকে সহজেই
পোটেনশিওমিটারের সাথে যুক্ত কোন ডিভাইসের সরনের পরিমাপ করা সম্ভব। মেকাট্রনিক্স কন্ট্রোলার যেহেতু কেবলমাত্র ভোল্টেজের
তারতম্যকেই ফিডব্যাক হিসাবে পরিমাপ করতে সক্ষম, ফ্লেক্স সেন্সরের মত এক্ষেত্রেও
তাই এই পরিবর্তিত রেজিস্ট্যান্স ভ্যালুকে কাজে লাগিয়ে সেন্সরের সাথে যুক্ত একটি
ভোল্টেজ ড্রাইভার সার্কিটের সাহায্যে প্রয়োজনীয় ভোল্টেজ উৎপন্ন করে কন্ট্রোলারে
পাঠানো হয়। নিচে একটি লিনিয়ার এবং রোটারি
পোটেনশিওমিটারের ছবি দেওয়া হল।
স্মোক সেন্সর
স্মোক বা গ্যাস
সেন্সর বর্তমানে মেকাট্রনিক্স সিস্টেম ছাড়াও বিভিন্ন যায়গায় ব্যাবহার করা হয়, যেমন
হাসপাতাল, শপিং মল বা কোন বড় বিল্ডিং ইত্যাদিতে এবং এর সাহায্যে সাধারনত কোন
স্থানে আগুনের উৎস হিসাবে স্মোক এবং গ্যাসের উপস্থিতি নির্ধারন করা হয়। সাধারনত দুই রকম পদ্ধতিতে স্মোক সেন্সর কাজ করে থাকে, এগুলি
হল অপ্টিক্যাল স্মোক সেন্সিং এবং আয়োনাইজেশান স্মোক সেন্সিং। অপ্টিক্যাল স্মোক সেন্সিং এর ক্ষেত্রে লাইট স্ক্যাটার
প্রিন্সিপাল কাজ করে এবং আয়োনাইজেশান স্মোক সেন্সর আয়োনাইজেশান পদ্ধতিতে বাতাসের
মধ্যে উপস্থিত মলিকিউলস পরিমাপ করে কন্ট্রোলারের জন্য প্রয়োজনীয় সিগন্যাল প্রস্তুত
করে । নিচে একটি স্মোক সেন্সরের ছবি দেওয়া
হল।
মোশান সেন্সর
এটি একটি
নন-কন্টাক্ট টাইপ ডিজিটাল সেন্সর এবং বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটি
সিস্টেম ও মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে এই ধরনের মোশান সেন্সরের ব্যাবহার প্রায়ই দেখা
যায়। মোশান সেন্সর প্রধানত তিন প্রকারের হয়, প্যাসিভ ইনফ্রারেড
সেন্সর বা PIR, মাইক্রোওয়েভ সেন্সর এবং ডুয়েলটেক
হাইব্রিড সেন্সর। তবে এগুলির মধ্যে প্যাসিভ ইনফ্রারেড সেন্সর বা PIR সেন্সরের ব্যাবহার সবথেকে বেশী দেখা যায়। PIR সেন্সরে সাধারনত সেন্সিং এলিমেন্ট হিসাবে একটি ‘পাইরো-ইলেক্ট্রিক’
সেন্সর ব্যাবহার করা হয় এবং ওই সেন্সরের ওপর একটি ‘ফ্রেসনেল লেন্স’ থাকে। পাইরো-ইলেক্ট্রিক
সেন্সর তৈরি করার জন্য প্রধানত দুটি কন্ডাক্টরের মাঝখানে ‘Lithium
Tantalite’ এর খুব ছোট একটি স্তর বা স্লাইস ‘ডোপ’
করে প্রস্তুত করা হয়, যা কিনা মানুষের শরীর থেকে নির্গত ‘ইনফ্রা-রেড রেডিয়েশানকে’
সেন্স করে খুব অল্প পরিমাণ সিগন্যাল প্রস্তুত করে। সেন্সরের
সাথেই সবসময় একটি অ্যাপ্লিফায়ার সার্কিট ব্যাবহার করা হয়, যাতে কিনা ওই বর্ধিত
সিগন্যাল কন্ট্রোলারে ফিডব্যাক হিসাবে ব্যাবহারের উপযুক্ত হয়। ফ্রেসনেল
লেন্স (Fresnel Lens) নামক এক ধরনের বিশেষ ডিজাইনের লেন্স
ওই পাইরো-ইলেক্ট্রিক সেন্সরের ওপরে ব্যাবহার করা হয়, যাতে সেন্সরে আসা ইনফ্রা-রেড
রেডিয়েশানকে একত্রিত করে বর্ধিত আকারে ওই পাইরো-ইলেক্ট্রিক সেন্সরের ঠিক ওপর ফেলা
যায়। নিচে একটি প্যাসিভ ইনফ্রারেড সেন্সরের ছবি দেওয়া হল।
বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটি
সিস্টেমে এই প্রকারের সেন্সরের ব্যাবহার প্রায়ই দেখা যায় এবং এই ধরনের সেন্সরের
সেন্সিং রেঞ্জ সাধারনত ৮ থেকে ১০ মিটারের মত হয়। অর্থাৎ সেন্সর থেকে ওই দূরত্তের মধ্যে কোন মানুষ বা পশু এসে
উপস্থিত হলে, তাদের শরীর থেকে নির্গত ইনফ্রা-রেড রেডিয়েশানকে সেন্স করে PIR সেন্সর কন্ট্রোলারের পক্ষে উপযুক্ত সিগন্যাল প্রস্তুত করে
থাকে। এরপর ওই সিগন্যাল কোন অ্যালার্ম সিস্টেমকে অন করা বা কোন
ভিডিও রেকর্ডিং সিস্টেমকে চালু করার কাজে ব্যাবহার করা হয়।
MEMS বা মাইক্রো-ইলেক্ট্রো-মেকানিক্যাল সেন্সর
MEMS বা Micro-Electro-Mechanical System হল এমন একটি ইলেক্ট্রো মেক্যানিক্যাল ডিভাইস, যেখানে সাধারনত একটিমাত্র
সিলিকন সাবস্ট্রেটের ওপর মাইক্রো সেন্সর, মাইক্রো অ্যাকচুয়েটর এবং অন্যান্য
ইলেক্ট্রনিক্স সার্কিট একত্রে সন্নিহিত অবস্থায় থাকে এবং কিছু ক্ষেত্রে খুব
সূক্ষ্ম কিছু মুভেবল কন্টাক্টও MEMS ডিভাইসের
ভেতর দেখতে পাওয়া যায়। এই সকল কম্পোনেন্টগুলির আকার সাধারনত
খুবই ছোট হয় এবং একটিমাত্র আধার বা কেসিং এর মধ্যেই এগুলি কম্প্যাক্ট অবস্থায় অ্যাসেম্বলড
থাকে এবং MEMS ডিভাইসগুলি সেরামিক, প্লাস্টিক
এবং মেটালিক এই তিন প্রকারের প্যাকেজিং এর হতে পারে। বর্তমানে বিভিন্ন মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে, অটোমোবাইলে, মোবাইল ফোনে ইত্যাদি
যায়গায় সেন্সর হিসাবে MEMS এর
ব্যাবহার প্রায়ই দেখা যায় এবং এদের মধ্যে বহুল প্রচলিত MEMS গুলি হল অ্যাক্সেলারোমিটার, জাইরোস্কোপ এবং ম্যাগনেটিক ফিল্ড সেন্সর। নিচে একটি সাধারন MEMS বোর্ড এবং
তার কম্পোনেন্টগুলির ছবি
দেওয়া হল, যেখানে একসাথে তিনটি সেন্সর (অ্যাক্সেলারোমিটার, জাইরোস্কোপ এবং
ম্যাগনেটিক ফিল্ড সেন্সর) অ্যাসেম্বলড করা
হয়েছে ।
MEMS সাধারনত ডিভাইসের অবস্থা অনুসারে বিভিন্ন ইলেক্ট্রিক্যাল সিগন্যাল প্রস্তুত
করে, যা কিনা কন্ট্রোলারকে ওই ডিভাইসের প্রকৃত অবস্থান এবং বিভিন্ন অবস্থা সম্পর্কে
অবহিত করে। যেমন MEMS অ্যাক্সেলারোমিটারের
সাহায্যে কোন ডিভাইসের অ্যাক্সেলারেশানের স্টাটিক বা ডাইনামিক ফোর্সের পরিমাপ করা
যায়, তেমনই কোন ডিভাইসের অ্যাঙ্গুলার পজিশান পরিবর্তনের পরিমাপ করার জন্য
জাইরোস্কোপের সাহায্য নেওয়া হয় এবং ম্যাগনেটিক ফিল্ড সেন্সরের সাহায্যে ওই
ডিভাইসের ওপর আগত ম্যাগনেটিক ফিল্ডের পরিমাপ খুব সূক্ষভাবে করা যায়।
আডভান্সড সেন্সিং টেকনোলোজি
বর্তমানে বিভিন্ন মেকাট্রনিক্স সিস্টেমে বেশ কিছু অ্যাডভান্সড সেন্সিং টেকনোলোজি ব্যাবহার করা হয়, উদাহরণস্বরূপ বার-কোড এবং QR কোড আইডেন্টিফিকেশান, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক আইডেন্টিফিকেশান, ট্রান্সপন্ডার ইত্যাদি। বার-কোড (Bar Code) আইডেন্টিফিকেশান পদ্ধতিতে লাল আলোর সাহায্যে সাদা এবং কালো রঙ এর একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্নকে সেন্স করানো হয়, যেখানে ওই প্যাটার্নের দ্বারা কোন প্রোডাক্টের সম্পর্কে ইনফর্মেশান দেওয়া থাকে এবং সেন্সরের সাহায্যে প্রাপ্ত ইনফর্মেশান, প্রয়োজন অনুসারে কন্ট্রোলারে বা কম্পিউটারে পাঠানো হয়। আবার QR কোড (Quick Response Code) আইডেন্টিফিকেশান পদ্ধতিতে QR কোডের ছবি স্ক্যান করে প্রয়োজনীয় ইনফর্মেশান সংগ্রহ করা হয় বা সরাসরি ‘অ্যাপসের’ সাহায্যে ওয়েবসাইট থেকে ওই প্রোডাক্টের সম্পর্কে ইনফর্মেশান পাওয়া যায়। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক আইডেন্টিফিকেশান পদ্ধতি অনেকটা বার-কোড আইডেন্টিফিকেশান পদ্ধতির মতই, শুধুমাত্র এখানে ইনফর্মেশান সাদা এবং কালো রঙের পরিবর্তে ম্যাগনেটিক স্ট্রিপের ওপর করা হয় এবং এক্ষেত্রে সুবিধা হল ওই কোডেড ইনফর্মেশান তেল বা গ্রিজের ভেতর নিমজ্জিত থাকলেও তা থেকে সহজেই প্রয়োজনীয় ইনফর্মেশান নেওয়া সম্ভব। ট্রান্সপন্ডারে সাধারনত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যাবহার করা হয় এবং এই রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সপন্ডারকেও চালু হতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ অ্যাডভান্সড অটোমোবাইল ইঞ্জিনে, গাড়ির ইঞ্জিনকে চালু করার জন্য চাবি ঘোরানো হলে গাড়ির সাথে যুক্ত কম্পিউটার থেকে একটি রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি চাবির সাথেই যুক্ত ট্রান্সপন্ডারে যায় এবং যতক্ষণ না ওই ট্রান্সপন্ডার থেকে কোন সাড়া বা রেসপন্স পাওয়া যায়, ততক্ষন গাড়ির ইঞ্জিন চালু করা যায় না। এই সকল অ্যাডভান্সড সেন্সিং টেকনোলোজি ছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে সিস্টেমের প্রয়োজনে আরও বিভিন্ন ধরনের স্পেশাল সেন্সিং ডিভাইসের ব্যাবহার দেখা যায়, যদিও সেগুলির ব্যাবহার খুবই সীমিত। নিচে কয়েকটি অ্যাডভান্সড সেন্সিং সিস্টেম ও ডিভাইসের ছবি দেওয়া হল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন