বুধবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২২

ইন্ট্রোডাকশান টু PLC

প্রোগ্রামেবল লজিক কন্ট্রোলার বা PLCর ইতিহাস কি

PLC ব্যাবহারের আগে অর্থাৎ 1960 এর দশকে এবং তার আগে সাধারনত রিলে, কন্টাক্টর ইত্যাদি ব্যাবহার করে কোন মেশিনের লজিক্যাল সার্কিট তৈরি করা হত এবং এদেরকে হার্ডওয়্যার কন্ট্রোল বলা হত এই ব্যাবস্থায় প্রথমে একটি ইলেকট্রিক্যাল সার্কিট ডায়াগ্রাম বানানো হত এবং এরপর তারের সাহায্যে প্রয়োজনীয় কম্পোনেন্টগুলিকে (রিলে, কন্টাক্টর ইত্যাদি) সংযোগ করে সার্কিটকে কমপ্লিট করা হত যদি সার্কিট তৈরির সময় কোন ভুল হত তবে তা খুঁজে বের করা এক্ষেত্রে কষ্টসাধ্য ছিল, নতুবা পুনরায় নতুন করে সার্কিট তৈরি করতে হত এছাড়াও জটিল লজিক্যাল সার্কিটের ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমানে রিলে, কন্টাক্টর ইত্যাদি ব্যাবহার করতে হত এবং সার্কিটের ডিজাইনের সময় বা তারের সংযোগের সময় যা কিনা খুবই আসুবিধাজনক ছিলএছাড়াও ছোট একটি মেশিনের ইলেকট্রিক্যাল প্যানেল বোর্ডের আকারও বিরাট হতএই সমস্ত অসুবিধার জন্য 1968 সালে প্রথম PLCর ব্যাবহার শুরু হয় যদিও প্রথমদিকে এর নাম ছিল “প্রোগ্রামেবল কন্ট্রোলার” কিন্তু  পরবর্তীতে 1971 সালে Allen-Bradley কোম্পানি “Bulletin 1774 PLC” নামে একটি ডিভাইস বাজারে আনে এবং সেখান থেকেই “PLC” কথাটির উৎপত্তি হয়PLCর উদ্ভাবন ও বিকাশের ক্ষেত্রে যে দুজনের নাম করা হয়, তারা হলেন “Richard Morley” এবং “Odo Josef Struger পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে আরও অনেক পরিবর্তন ও পরিমার্জনের পর বর্তমান PLCর জন্ম হয়

 

PLC বলতে কি বোঝায়

PLC কথাটির আক্ষরিক অর্থ হল প্রোগ্রামেবল লজিক কনট্রোলার (Programmable Logic Controller), যদিও কিছু কিছু ম্যানুফ্যাকচারার এটিকে “PMC’ বা  প্রোগ্রামেবল মেশিন কনট্রোলারও (Programmable Machine Controller) বলে থাকেন সাধারানত PLC ম্যানুফ্যাকচারার কোম্পানি একটি স্ট্যান্ডার্ড হার্ডওয়্যার দিয়ে এটি তৈরি করেন এবং মেশিন ম্যানুফ্যাকচারাররা এটিকে মেশিনের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যাবহার করেন বর্তমানে PLC র সাহায্যে আগেকার সমস্ত জটিল রিলে লজিককে সহজেই পরিবর্তন করা সম্ভব হয়েছে PLC নামটি থেকেই বোঝা যায় এটি পুরনো রিলে লজিক এর তুলনায় সহজেই প্রোগ্রামেবল এবং ফ্লেক্সিবল এবং মেশিনের প্রোগ্রাম সিকোয়েন্সে কোন পরিবর্তন করার প্রয়োজন হলে তা সহজেই শুধুমাত্র সফটওয়্যার প্রোগ্রাম চেঞ্জ করেই করা যায়, তার জন্য PLC হার্ডওয়্যারের বিশেষ কোন পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয় নাআবার PLCর সাথে বিভিন্ন কমিউনিকেটিং ডিভাইস যেমন কম্পিউটার, ডিসপ্লে ইউনিট, ডাটা স্টোরেজ ডিভাইস ইত্যাদি সহজেই প্রয়োজন অনুসারে কানেক্ট করা যায়  

 

PLC কোথায় ব্যাবহার করা হয়

বর্তমানে প্রায় সমস্ত ধরনের মেশিন টুল ইন্ডাস্ট্রীতে PLC ব্যাবহার করা হচ্ছে এবং এগুলির মধ্যে যেমন বিভিন্ন ধরনের জটিল অপারেশান যুক্ত ছোট বড় CNC বা NC মেশিন রয়েছে তেমনই ছোট ছোট ম্যানুয়াল মেশিনকেও PLC এর সাহায্যে অটোমেটিক কন্ট্রোল করা হচ্ছেঅর্থাৎ এক কথায় বলতে হলে প্রায় সমস্ত ধরনের মেশিনকেই বর্তমানে ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের PLCর সাহায্যে কন্ট্রোল করা হয় মেশিন টুল ইন্ডাস্ট্রী ছাড়াও এলিভেটর, প্রসেস কন্ট্রোল, ট্রাফিক লাইট কন্ট্রোল,  অটোমেটিক ডোর কন্ট্রোল ইত্যাদি সমস্ত জায়গায় বর্তমানে PLC ব্যাবহার করা  হচ্ছে

 

 PLC ইউনিটে কি কি থাকে

সাধারনত একটি  PLC কতগুলি আলাদা আলাদা বেসিক ইউনিট এর সমন্নয়ে তৈরি হয় এগুলি হল যথাক্রমে পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট, সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট বা  CPU এবং ইনপুট ও আউটপুট মডিউল এছাড়াও প্রয়োজন অনুসারে কিছু অতিরিক্ত মডিউলও PLCর সাথে কখনো কখনো যুক্ত থাকে বিভিন্ন PLC  ম্যানুফ্যাকচারাররা কখনো এই ইউনিট গুলিকে আলাদা আলাদা নামও দিয়ে থাকেন PLCকে সাধারনত একটি সফটওয়্যার প্রোগ্রামের সাহায্যে চালানো হয়, যাকে PLC  Program বলা হয় এই PLC প্রোগ্রাম বাইরের কম্পিউটারে লিখে PLCর মধ্যে থাকা মেমোরিতে লোড করা হয় এবং পরবর্তীতে PLC, এই প্রোগ্রাম অনুসারেই বিভিন্ন অপারেশান করে থাকে PLC প্রোগ্রাম আবার বিভিন্ন ল্যাঙ্গুয়েজে লেখা হয়, এগুলির মধ্যে ল্যাডার লজিক (Ladder Logic) বা LAD, স্টেটমেন্ট লিস্ট (Statement List) বা STL এবং ফাংশান ব্লক ডায়াগ্রাম (Function Block Diagram) বা FBD উল্লেখযোগ্য এদের মধ্যে আবার ল্যাডার লজিক বা LAD ল্যাঙ্গুয়েজকে বিভিন্ন PLC ম্যানুফ্যাকচারাররা সবথেকে বেশি ব্যাবহার করে থাকেন

 

PLC কি ভাবে কাজ করে

প্রায় সব ধরনের PLC তে একটি পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট থাকে, যা কিনা সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট, ইনপুট ও আউটপুট মডিউল, বেস ইউনিট ইত্যাদিতে ইলেক্ট্রিক্যাল পাওয়ার সাপ্লাই করে সাধারনত সব ধরনের PLC তে  24V DC ভোল্টেজকে, পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিটের আউটপুট হিসাবে নেওয়া হয় ইনপুট মডিউল গুলির সাথে সাধারনত মেশিনের মধ্যে ব্যবহৃত বিভিন্ন ফিল্ড ডিভাইস যেমন সেন্সরস এবং বিভিন্ন সুইচের সংযোগ থাকে এবং সেখান থেকেই সেন্সরগুলির State বা অবস্থা (ON বা OFF) সিগন্যাল হিসাবে নেওয়া হয়এছাড়া আউটপুট মডিউল গুলি মেশিনের বিভিন্ন অ্যাকচুয়েটরগুলিকে যেমন সলিনয়েড ভাল্ব, পাম্প, মোটর ইত্যাদিকে কন্ট্রোল করার জন্য ব্যাবহার করা হয় ইনপুট ডিভাইসের অবস্থার উপর নির্ভর করে এবং কন্ট্রোলারের মধ্যে লিখিত প্রোগ্রামের নির্দেশ অনুসারে সাধারনত এই আউটপুট ডিভাইসগুলিকে নিয়ন্ত্রন করা হয়ে থাকেসেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট বা CPU তে অবস্থিত একটি কম্যুনিকেশন পোর্ট এর সাহায্যে PLC ইউনিটকে বাইরের প্রোগ্রামিং ডিভাইসের সাথে সংযোগ করা হয়PLCতে অবস্থিত প্রোগ্রামকে আপলড বা ডাউনলোড করার জন্য  সাধারনত CPU তে একটি EEPROM (electrically erasable programmable read-only memory) ব্যাবহার করা হয় ওই PLC প্রোগ্রামকে স্টোর করে রাখার জন্য একবার প্রোগ্রামকে PLCতে ডাউনলোড করা হয়ে গেলে সাধারনত বাইরের প্রোগ্রামিং ডিভাইসের আর কোন প্রয়োজন হয় না

PLC কি ভাবে কাজ করে সেটা বোঝার জন্য প্রথমেই জানতে হবে সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট বা CPU এর স্ক্যান সিকোয়েন্স PLCকে অন করার পর প্রথমেই, ইনপুট মডিউলের সাথে যুক্ত ইনপুট ডিভাইসগুলির স্ট্যাটাসকে স্ক্যান করা হয় এবং সেই স্ক্যান ডাটা ইনপুট ইমেজ টেবিল বা একটি রেজিস্টারে ট্রান্সফার করা হয় এরপর PLCর মধ্যে লোড করা সফটওয়্যার PLC প্রোগ্রামটিকে স্ক্যান করে ও তার সাথে সাথে প্রোগ্রামের মধ্যেকার প্রতিটি স্টেটমেন্টকে চেক করে দেখে।  প্রোগ্রামে দেওয়া নির্দেশ অনুসারে যদি ইনপুট স্ট্যাটাস উপস্থিত থাকে, তবে প্রয়োজনীয় নির্দেশ আউটপুট ইমেজ টেবিলে বা আউটপুট রেজিস্টারে ট্রান্সফার করে এবং সেখান থেকে প্রথমে ওই নির্দেশাবলি আউটপুট মডিউলে পাঠানো হয় এবং এরপর নির্দেশ অনুসারে ওই আউটপুট মডিউল থেকে এর সাথে যুক্ত বিভিন্ন আউটপুট ডিভাইসগুলিকে অ্যাক্টিভেট করা হয়

PLC যেহেতু একটি ডেডিকেটেড কন্ট্রোলার, তাই এটি একটিমাত্র প্রোগ্রামকেই বারংবার এবং নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রসেস করতে থাকে এবং PLC ওই প্রোগ্রামের প্রথম বা শুরু থেকে রিড (read) করে শেষ পর্যন্ত যায় পুনরায় আবার প্রথম থেকে শুরু করে এবং PLC যতক্ষণ ON থাকে, ততক্ষন এই প্রসেসটি বারংবার চলতে থাকে এই একটি প্রোগ্রাম সাইকেল সম্পূর্ণ হতে যে সময় লাগে তাকে PLC স্ক্যান টাইমবলা হয় যদিও PLC প্রোগ্রামের এই স্ক্যান টাইম খুবই দ্রুত হয় এবং এটি সেকেন্ডের ভগ্নাংশ সময়ের মধ্যে ঘটে থাকে ও  PLC র স্ক্যান টাইম সাধারনত নির্ভর করে থাকে PLC প্রোগ্রামের লেংথ এর ওপর নিচে PLC র স্ক্যান প্রসেসের একটি ছবি দেওয়া হল 


PLCতে সেন্সর কাকে বলে

PLCতে সেন্সর হল এমন একটি ডিভাইস যা কিনা বাইরে থেকে কোন মেশিনের কোন অংশের বা পার্টের ফিজিক্যাল অবস্থা ইলেক্ট্রিক্যাল সিগন্যালের আকারে PLCতে পাঠিয়ে থাকে একটি মেশিনে বিভিন্ন ধরনের সেন্সর থাকতে পারে এবং সেগুলি সবই মেশিনের PLCর ইনপুট মডিউলের সাথে সংযুক্ত থাকে, তাই মেশিনে ব্যাবহৃত সকল সেন্সরকেই ইনপুট ডিভাইসও বলা হয়ে থাকে কোন সেন্সরের অবস্থা (active or deactive) থেকেই PLC, মেশিনের ঐ পার্টের ফিজিক্যাল অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হয় যেমন একটি খুব সরল সেন্সরের উদাহরন হল পুশ-বটন সুইচ এই সুইচের পুশ-বটন কন্টাক্ট খোলা না বন্ধ তা বোঝার জন্য একটি 24 V DC লাইন ঐ সুইচের কন্টাক্টের মধ্যে দিয়ে PLCর ইনপুট মডিউলের সাথে সংযুক্ত থাকে যদি কন্টাক্ট খোলা থাকে তবে 24 V DC ইনপুট মডিউলে পৌঁছাবে না এবং কন্টাক্ট ক্লোজ বা বন্ধ থাকলে 24 V DC PLCর ইনপুট মডিউলে  উপস্থিত থাকবেঅর্থাৎ সোজা কথায় কোন সেন্সরের অবস্থা বোঝার জন্য PLC এই 24 V DC কেই মনিটর করে থাকে

সাধারনত একটি সেন্সর বা ইনপুট ডিভাইসের যে কোন দুটি অবস্থা থাকতে পারে, অন বা অফ (ON or OFF) অবস্থা অথবা সেন্সরের অ্যাক্টিভেট বা ডি-অ্যাক্টিভেট অবস্থা ইনপুট ডিভাইসের এই অন অবস্থার সিগন্যালকে PLC ধরে নেয় লজিক ওয়ানবা লজিক হাই হিসাবে (Logic 1 or Logic high) এবং অফ অবস্থার সিগন্যালকে PLC ধরে নেয় লজিক জিরোবা লজিক লো হিসাবে (Logic 0 or Logic low) অর্থাৎ কোন সেন্সর অ্যাক্টিভেট করলে বা সেন্সরের স্ট্যাটাস  লজিক ওয়ান অর্থ, 24 V DC ঐ ইনপুট ডিভাইস থেকে PLCর ইনপুট মডিউলে উপস্থিত থাকবে ঠিক সেরকমই কোন সেন্সর ডি-অ্যাক্টিভেট হলে বা সেন্সরের স্ট্যাটাস  লজিক জিরোর  অর্থ, কোন ভোল্টেজ ঐ ইনপুট ডিভাইস থেকে PLC তে যাবে না নিচের ছবিতে একটি সুইচের লজিক জিরো এবং লজিক ওয়ান অবস্থা বোঝানো হয়েছে


কিভাবে একটি সেন্সর PLCর ইনপুট মডিউলের সাথে সংযুক্ত থাকে

মেশিনের বিভিন্ন ইনপুট ডিভাইস যেমন সুইচেস, পুশ-বাটনস, বিভিন্ন সেন্সরস ইত্যাদি PLCর ইনপুট মডিউলের টার্মিনাল স্ট্রিপের সাথে কিভাবে সংযোগ করা থাকে তা নিচের ছবিতে দেখানো হল

 

উপরের ছবি অনুযায়ী PLCর ইনপুট মডিউলের টার্মিনাল স্ট্রিপের উপর আলাদা আলাদা ইনপুট টার্মিনালের জন্য আলাদা আলাদা ইনপুট অ্যাড্রেস (Input address) থাকে অর্থাৎ PLC শুধুমাত্র ঐ ইনপুট অ্যাড্রেসের স্ট্যাটাস (জিরো অথবা ওয়ান) দেখেই বুঝতে পারে সংশ্লিষ্ট সেন্সরের স্ট্যাটাস কি যদি ইনপুট অ্যাড্রেসের স্ট্যাটাস ওয়ান হয়, তবে PLC বুঝবে সংশ্লিষ্ট সেন্সরটি অ্যাক্টিভেটেড রয়েছে আবার যদি ইনপুট অ্যাড্রেসের স্ট্যাটাস জিরো হয়, তবে PLC বুঝবে সংশ্লিষ্ট সেন্সরটি ডি-অ্যাক্টিভেটেড রয়েছে এছাড়াও বাইরে থেকে দেখে কোন সেন্সরের স্ট্যাটাস কি তা বোঝার জন্য PLCর ইনপুট মডিউলের টার্মিনাল স্ট্রিপের উপর আলাদা ইনপুট অ্যাড্রেসের জন্য আলাদা আলাদা LED ব্যাবহার করা হয় LED জ্বলার অর্থ সংশ্লিষ্ট সেন্সরটি অ্যাক্টিভেটেড রয়েছে এবং নিভে থাকার অর্থ সেন্সরটি ডি-অ্যাক্টিভেটেড রয়েছে পুর্বের ছবিতে ইনপুট 0.3 অ্যাক্টিভেটেড রয়েছে (যেহেতু NO কন্টাক্ট সুইচ যুক্ত রয়েছে) এবং বাকি দুটি ইনপুট যথাক্রমে 0.1 এবং 0.6 (যে দুটি টার্মিনালে সুইচ এবং সেন্সর সংযুক্ত রয়েছে) ডি-অ্যাক্টিভেটেড রয়েছে মেশিনের প্রয়োজন অনুসারে এবং PLCর ধরন অনুযায়ী ইনপুট মডিউলও বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে যেমন ইনপুট মডিউলের টার্মিনাল স্ট্রিপের সাথে কতগুলি ইনপুট ডিভাইসের সংযোগ করা যাবে, ইনপুট ডিভাইসগুলির জন্য ইলেক্ট্রিক্যাল আইসোলেশান থাকবে কিনা, কারেন্ট রেটিং কত হবে ইত্যাদি

 

PLCতে অ্যাকচুয়েটার বা আউটপুট ডিভাইস কাকে বলে 

PLCর আউটপুট মডিউল থেকে প্রাপ্ত ইলেক্ট্রিক্যাল সিগন্যালকে কাজে লাগিয়ে, সাধারনত অ্যাকচুয়েটার বা আউটপুট ডিভাইসের সাহায্যে মেশিনের কিছু ফিজিক্যাল অবস্থার পরিবর্তন করার কাজে ব্যাবহার করা হয় আউটপুট ডিভাইসগুলিকে সাধারনত PLCর আউটপুট মডিউলের সাথেই সংযুক্ত করা থাকে যেমন উদাহরণস্বরূপ মোটর কন্টাক্টর, মেশিনে বহুল ব্যাবহৃত একটি আউটপুট ডিভাইস PLC থেকে প্রাপ্ত আউটপুট সিগন্যালের উপর নির্ভর করে একটি মোটরকে এই কন্টাক্টরের সাহায্যে চালু বা বন্ধ করা যায় কোন মেশিনের প্রয়োজন অনুযায়ী আলাদা আলাদা কাজের জন্য বিভিন্ন ধরনের আউটপুট ডিভাইস যেমন সলিনয়েড কয়েল, কন্টাক্টর, রিলে, বিভিন্ন প্রকারের লাইট ইত্যাদি ব্যাবহার করা হয়ে থাকে  

সাধারনত PLC থেকে প্রাপ্ত আউটপুট সিগন্যালের দুটি অবস্থা হতে পারে, অন অবস্থা এবং অফ অবস্থা (ON or OFF condition) আউটপুট ডিভাইসকে অন করার জন্য সিগন্যালকে PLC ধরে নেয় লজিক ওয়ানবা লজিক হাই হিসাবে (Logic 1 or Logic high) এবং অফ করার সিগন্যালকে PLC ধরে নেয় লজিক জিরোবা লজিক লো হিসাবে (Logic 0 or Logic low) যদি কোন আউটপুট অ্যাড্রেসের স্ট্যাটাস ওয়ান হয়, তবে PLC থেকে সংশ্লিষ্ট আউটপুট ডিভাইসটিকে অ্যাক্টিভেট করার জন্য 24 V DC সাপ্লাই PLCর আউটপুট মডিউলের টার্মিনাল স্ট্রিপে  উপলব্ধ থাকে মেশিনে ব্যাবহৃত আউটপুট ডিভাইসগুলি বিভিন্ন ভোল্টেজ রেটিং এর হতে পারে, যেমন 24 V DC, 110 V AC, 220 V AC ইত্যাদি আউটপুট ডিভাইসের ভোল্টেজ রেটিং যাই হোক না কেন PLCর আউটপুট মডিউলের টার্মিনাল স্ট্রিপে প্রাপ্ত 24 V DC সাপ্লাইকেই বিভিন্ন রিলের সাহায্যে সংশ্লিষ্ট আউটপুট ডিভাইসের  জন্য প্রয়োজনীয় ভোল্টেজ দেওয়া হয় পরের ছবিতে একটি লাইটের লজিক জিরো এবং লজিক ওয়ান অবস্থা বোঝানো হয়েছে

কিভাবে একটি অ্যাকচুয়েটার PLCর আউটপুট মডিউলের সাথে সংযুক্ত থাকে

CNC মেশিনে ব্যাবহৃত বিভিন্ন আউটপুট ডিভাইস যেমন কন্টাক্টর, সলিনয়েড, ল্যাম্প ইত্যাদি PLCর আউটপুট মডিউলের টার্মিনাল স্ট্রিপের সাথে কিভাবে সংযুক্ত থাকে তা নিচের ছবিতে দেখানো হল 


উপরের ছবি অনুসারে আউটপুট টার্মিনাল স্ট্রিপের উপর আলাদা আলাদা আউটপুট টার্মিনালের জন্য আলাদা আউটপুট অ্যাড্রেস (Output address) থাকে অর্থাৎ PLC যদি ঐ আউটপুট অ্যাড্রেসের স্ট্যাটাস জিরো করে তবে সংশ্লিষ্ট আউটপুট ডিভাইসটি ডি-অ্যাক্টিভেটেড  থাকবে এবং যদি ঐ আউটপুট অ্যাড্রেসের স্ট্যাটাস ওয়ান হয়, তবে সংশ্লিষ্ট আউটপুট ডিভাইসটি অ্যাক্টিভেটেড হবে এছাড়াও বাইরে থেকে দেখে কোন আউটপুট ডিভাইসের স্ট্যাটাস কি তা বোঝার জন্য PLCর আউটপুট মডিউলের টার্মিনাল স্ট্রিপের উপরেও আলাদা আউটপুট অ্যাড্রেসের জন্য আলাদা আলাদা LED ব্যাবহার করা হয় LED জ্বলার অর্থ সংশ্লিষ্ট ডিভাইসটি অ্যাক্টিভেটেড রয়েছে এবং নিভে থাকার অর্থ ডিভাইসটি ডি-অ্যাক্টিভেটেড রয়েছে যেমন পুর্বের ছবিতে 0.7 আউটপুট অ্যাড্রেসটি অন রয়েছে, এর অর্থ ওই আউটপুট অ্যাড্রেসের সাথে যুক্ত ডিভাইসটি অ্যাক্টিভেটেড রয়েছে মেশিনের প্রয়োজন অনুযায়ী এবং PLCর ধরন অনুসারে আউটপুট মডিউলও বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে যেমন আউটপুট মডিউলের টার্মিনাল স্ট্রিপের সাথে কতগুলি আউটপুট ডিভাইসের সংযোগ করা যাবে, আউটপুট ডিভাইসগুলির ভোল্টেজ ও কারেন্ট রেটিং কি হবে ইত্যাদি

PLCর আউটপুট মডিউল থেকে সাধারনত 24 V DCকে আউটপুট হিসাবে নেওয়া হয়, এবং ঐ 24 V DC ভোল্টেজের সাহায্যে বিভিন্ন রিলেকে অ্যাক্টিভেট বা ডি-অ্যাক্টিভেট করা হয়ে থাকে আউটপুট ডিভাইসের ধরনের বা টাইপের ওপর নির্ভর করে ওই রিলের মধ্যে দিয়ে প্রয়োজনীয় ভোল্টেজ সংশ্লিষ্ট আউটপুট ডিভাইসগুলিতে পাঠানো হয়

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Popular Posts